•   Thursday, 21 Nov, 2024
Metro

মেট্রোরেলের মিরপুর–১০ নম্বর স্টেশন শিগগিরই চালু

Generic placeholder image
  নিজস্ব প্রতিবেদক

মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে আগামী সপ্তাহেই ট্রেন থামা শুরু হতে পারে। স্টেশনটির প্রয়োজনীয় মেরামতকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, তা মেট্রোরেল থামিয়ে পরীক্ষা করা হবে। কোনো সমস্যা না হলে আগামী সপ্তাহেই স্টেশনটি চালু হবে।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। কোম্পানিটির সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কোনো ত্রুটি না পেলে বিষয়টি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবীর খানকে অবহিত করা হবে। এরপরই মিরপুর-১০ স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা শুরু হয়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে যন্ত্র থেকে টিকিট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বের হচ্ছে কি না, ভাড়া পরিশোধ করে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটগুলো খুলছে কি না, স্টেশনে এসে জায়গামতো ট্রেনের দরজা খুলছে কি না, এসব বিষয় পরীক্ষা করা হবে। এ ছাড়া স্টেশনে থাকা ইলেকট্রনিক পর্দায় ট্রেন আসার তথ্য সঠিকভাবে দেখা যায় কি না এবং ট্রেনের তথ্যের অডিও ঘোষণা সঠিকভাবে প্রচারিত হচ্ছে কি না, তা পরীক্ষা করা হবে।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার মধ্যে গত ১৮ জুলাই মিরপুর–১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই দিন বিকেল পাঁচটায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়। ২০ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিএমটিসিএলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেছিলেন, ‘‌ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি মেরামত করে পুনরায় চালু করতে এক বছরের মতো সময় লাগতে পারে।’

২৭ জুলাই তখনকার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবশ্য সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর–১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটা এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না।’
সরকার পরিবর্তনের পর দুই মাসের মাথায় কাজীপাড়া স্টেশন চালু করা হয়। তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনও চালু হতে যাচ্ছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, তৎকালীন সরকারের সময় মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনের মেরামতের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল। তবে কাজীপাড়া স্টেশন মেরামতে ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। 

আর মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন মেরামতে কত টাকা খরচ হয়েছে, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ব্যয় খুবই অল্প বলে জানা গেছে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, মেরামতকাজ শেষ হয়েছে। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে (টেস্ট) মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন চালু করা হবে। খরচ সম্পর্কে তিনি বলেন, কোনো সরঞ্জাম আমদানি করা হয়নি। অত্যন্ত স্বল্প খরচে মেরামত সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে কিছু কেনাকাটা করা লাগবে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় টিকিট বিক্রির যন্ত্র, কম্পিউটার, ভাড়া পরিশোধ করে প্রবেশ ও বের হওয়ার স্বয়ংক্রিয় গেট, স্টেশনের ইলেকট্রনিক পর্দা ও কিছু কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিছু সরঞ্জাম ও উপকরণ স্থানীয় বাজার থেকে কেনা হয়েছে। তবে টিকিট কাটার যন্ত্র এবং ভাড়া পরিশোধ করে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটগুলো স্থানীয় বাজারে নেই। আমদানি করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, টিকিট যন্ত্র ও গেট উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও বিজয় সরণি স্টেশন থেকে নিয়ে বসানো হয়েছে। এসব স্টেশনে যাত্রীর চাপ তুলনামূলক কম। সেখানকার একাধিক মেশিন ও গেটের মধ্য থেকে কিছু স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোর ভেতর প্রদর্শনকেন্দ্রে আটটি গেট ছিল, সেগুলো এনে লাগানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমদানি করে ওই সব জায়গায় গেট ও টিকিট কাটার যন্ত্রগুলো বসানো হবে। তবে আমদানি করলেও আগের সরকার যে ব্যয় প্রাক্কলন করেছিল, তত টাকা লাগবে না।

Metro Rail
Comment As:

Comment (0)