বকেয়া ভ্যাটের প্রায় ৭০ কোটি টাকা চেয়ে বিটিআরসিকে এনবিআরের চিঠি
প্রকৌশল সমাচার প্রতিবেদকঃ রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণ ফির ওপরে উৎসে কর্তিত মূসকের ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বিটিআরসিকে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। টাকা পরিশোধের জন্য বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড একীভূত হয়। সে সময় একীভূত হওয়া ফি বাবদ বিটিআরসিকে ৪৭১ কোটি টাকা পরিশোধ করে রবি-এয়ারটেল। পরিশোধিত ওই অর্থের ওপর ১৫ শতাংশ হারে উৎসে মূসকের ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আদায়যোগ্য হয়। উৎসে মূসকের টাকা সরাসরি পরিশোধ না করে রবি নিরাপত্তা হিসেবে এর বিপরীতে ২০১৭ সালে ওয়ান ব্যাংক থেকে শর্তযুক্ত গ্যারান্টি দেয় বিটিআরসিকে। পরে বিটিআরসি ২০২০ সালের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে এ টাকা নগদায়নের বিষয়ে জানতে ওয়ান ব্যাংকে চিঠি দেয়। ওয়ান ব্যাংক ওই চিঠির উত্তরে জানায়, গ্যারান্টির দুটি শর্ত পূরণ না হওয়ায় এ টাকা নগদায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
এনবিআরের চিঠি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দুটি শর্তই পূরণ হয়েছে। স্পেকট্রাম টুজি ও থ্রিজি ফির বিপরীতে গ্রামীণফোন লিমিটেড ও বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের মূসক চালান ১১ মোতাবেক মূসক পরিশোধিত হওয়ায় প্রথম শর্ত পূরণ হয়েছে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে গত ১০ জানুয়ারি সিভিল পিটিশন নং ১৯৩৬/২০১২-এর রায় প্রচার হওয়ায় দ্বিতীয় শর্তটিও পূরণ হয়েছে। তবে দুটি শর্ত পূরণ হওয়ার পরও একীভূতকরণ ফির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর্তনের অপরিশোধিত মূসকের ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এনবিআরকে দেয়নি বিটিআরসি। সংস্থাটিকে লেখা এক চিঠিতে এলটিইউ কমিশনার ফারজানা আফরোজ ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ পর্যায়ে রাজস্ব আহরণের স্বার্থে বকেয়া টাকা পরিশোধের আহ্বান জানান। চিঠিতে তিনি মূসক, ঢাকার অর্থনৈতিক কোডে ‘১-১১৩৩-০০০৬-০৩১১’ জমা করতে অনুরোধ করেন।
বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মূল টাকাটার একটি অংশ এনবিআরের ব্যাংক হিসাবে যাওয়ার কথা। তবে আমাদের অর্থ ও হিসাব বিভাগ এ বিষয়ে তাদের প্রস্তাব এখনো জমা দেয়নি। তাদের প্রস্তাব এলে তখন দ্রুতই টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবে।’
অন্যদিকে এনবিআর সূত্র জানায়, ভ্যাটের টাকা শর্তযুক্ত ব্যাংক গ্যারান্টির মধ্যে থাকায় দীর্ঘদিন এ টাকা বকেয়া পড়ে ছিল। সরকারি একটি সংস্থা হিসেবে বিটিআরসির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ মানসিকতা থাকা উচিত ছিল। টাকা জমা হওয়ার পর তাদের চিঠি দিয়ে টাকা আদায়ের প্রক্রিয়ায় যাওয়াটা শোভনীয় নয়। কিন্তু মৌখিক আলোচনা ও আশ্বাসের পর তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় চিঠি দিয়েছে এনবিআর।
সুত্রঃ বণিক বার্তা