•   Friday, 18 Oct, 2024

সেতু অসম্পূর্ণ, ঠিকাদার প্রকৌশলীর ঠেলাঠেলি

Generic placeholder image
  প্রকৌশল সমাচার ডেস্ক

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়িয়েও একটি সেতুর নির্মাণকাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে প্রকৌশলী ও ঠিকাদার একে অপরকে

দোষারোপ করছেন। উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে খাগড়াবাড়িয়া এলাকায় সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। ৫৫৫ দিন মেয়াদি সেতুর নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ঢাকার উত্তরার এমএলটি অ্যান্ড এমইএইচ জেভি। ঠিকাদার মো. ইকরামুল হক। সেতুর নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ৩০ জুন; কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সেতুর কাজ শেষ হয় ৫০ ভাগ।

 

এরপর ঠিকাদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয় ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেই মেয়াদও শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে সেতুর প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়। বর্তমানে ৯টি গার্ডারের মধ্যে ৬ নম্বর গার্ডারের কাজ চলছে। আগামী ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়িয়েও নির্ধারিত সময়ে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় প্রকৌশলী ও ঠিকাদার পরস্পরকে দোষারোপ করছেন। ঠিকাদার বলছেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে টাকা দিয়ে খুশি করতে হয়। তিনি তা করছেন না বলে তাঁর কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে ঠিকাদারের এই অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, ঠিকাদারের টেকনিক্যাল জনবল না থাকায় সেতুর কাজ এগোচ্ছে না।

 

এলাকাবাসী জানান, পান্টি ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের ১০-১২টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ এই পথে চলাচল করে। সেখানে আগে বাঁশের সেতু ছিল, বর্তমানে পাকা সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। চলাচল সচল রাখার জন্য নির্মাণাধীন সেতুর পাশে একটি বাঁশের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেটির অবস্থা বেশ খারাপ।

 

গত রোববার সকালে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক গার্ডার ঢালাইয়ে শাটারিংয়ের কাজ করছেন। পাশের বাঁশের তৈরি জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

 

স্থানীয় পান্টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাদল বিশ্বাস বলেন, ‘কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে, কিন্তু সেতু নির্মাণ হয়নি। ঠিকাদার-প্রকৌশলীর গড়িমসিতে কাজ এগোচ্ছে না। মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা দ্রুত সেতুর কাজ শেষ চাই।

 

পাশের কাঁচেরকোল ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. সাহেব আলী বলেন, দুই উপজেলার ১০-১২টি গ্রামের মানুষ এই পথে চলাচল করে। পান্টি নামকরা বাজার হওয়ায় শৈলকুপার অধিকাংশ কৃষক মালামাল নিয়ে এই পথে যাতায়াত করেন। কিন্তু সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন তাঁরা।

 

এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. ইকরামুল হক বলেন, ‘উপজেলা প্রকৌশলী অতিরিক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে বারবার সেতুর কাজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আসেন। প্রতিবার তাঁকে খুশি করতে হয়। খুশি করতে ব্যর্থ হওয়ায় নির্মাণকাজ এগোচ্ছে না। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে কাজ শেষ হতে পারে।

 

তবে ঠিকাদারের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম বলেন, ঠিকাদারের টেকনিক্যাল জনবল নেই। লেবার দিয়েই কাজ চালান। আমাদের বারবার সাইডে যেতে হয়। চলতি বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

Comment As:

Comment (0)