কক্সবাজারে লাল সুবজের ট্রেন
 
                                         
 
                                        অপেক্ষার পালা শেষ করে কক্সবাজারে গেলে লাল সবুজের ট্রেন। শনিবার কক্সবাজার শহরের ঝিলংজায় ঝিনুকের আদলে তৈরি এশিয়ার সর্ব বৃহৎ আইকনিক রেল স্টেশনে এই রেলপথ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একুশটি গাড়ি নিয়ে নতুন ট্রেনটি বুধবার কক্সবাজারে পৌঁছেছে। স্বপ্নের এই ট্রেন যাত্রার দৃশ্য দেখতে দীর্ঘ রেল পথ এবং বিভিন্ন স্টেশনে জড়ো হয় বিপুল সংখ্যক মানুষ। শনিবার প্রধানমন্ত্রী এই ট্রেনে চড়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বহুল প্রতিক্ষিত রেল লাইন প্রকল্পের। এই রেল পথ পর্যটন শিল্পে আমুল পরিবর্তন আনবে বলে ধারনা সবার।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন পথ ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে দোহাজরি পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার পথ বৃটিশ আমলে তৈরি। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয় বর্তমান সরকার। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার বিবেচনায় গৃহীত একটি মেগা প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় সংস্কার করা হয়েছে শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু। এই মেগা প্রকল্পে ১০২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।
মনোমুগ্ধকর আইকনিক রেলস্টেশন: কক্সবাজার শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে আইকনিক রেল স্টেশন। ঝিনুকের আদলে তৈরি দৃষ্টিনন্দন এই স্টেশন ভবনটির আয়তন এক লক্ষ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয় তলা ভবনটির কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। ঝিনুকের আদলে তৈরি স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিং ইত্যাদি ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারাদিন সমুদ্র সৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। এই স্টেশন দিয়ে দিনে ৪৬ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবেন।’ 
বদলে যাবে কক্সবাজার: এই রেল পথ কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিপূর্ণতা দেবে। বিদেশী পর্যটক আনতে সহায়ক হবে। শুধু শীতকালে নয়, বর্ষা সহ সারা মৌসুম পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে উৎসাহিত হবে। শুধু তাই নয় সহজ রেল যোগাযোগের কারণে কক্সবাজার এলাকায় উৎপাদিত পণ্য: মাছ, শুটকি, লবণ, পান, সবজি সহ নানা পণ্য পরিবহণ ও বিদেশে রপ্তানির সুযোগ বাড়বে। কক্সবাজার সহ দেশের অর্থনীতিতে আমুল পরিবর্তন আসবে।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ৫৫ টাকা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পথে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কয়টি ট্রেন চলবে, ট্রেন চলাচলের সময়, এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এর আগেই নতুন রুটে ভাড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে রেল ভবনের নির্দেশনা পেলে তা ঠিক করা হবে। চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন শহর কক্সবাজারে ট্রেনে করে যেতে লাগবে সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৬৯৬ টাকা। ঢাকা থেকে শোভন চেয়ারে (নন-এসি) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১৫ টাকা আর এসি ৯৮৪ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
 
                                    


 
                                                 
                                                 
                                                 
                                                 
                                                 
                                                