দেশে উন্নয়নের যে জোয়ার বয়ে গেছে তার পেছনের কারিগর দেশের প্রকৌশলীবৃন্দ: ওবায়দুল কাদের
প্রকৌশল সমাচার প্রতিবেদক: দেশের প্রকৌশলীদের অভিভাবক সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর উদ্যোগে প্রকৌশলীদের নিয়ে আইইবি সদর দপ্তর রমনায় আজ বিকেল তিন ঘটিকার সময় উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।
আইইবি'র প্রেসিডেন্ট এবং আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর এর সভাপতিত্বে ও আইইবি'র সম্মানী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু এর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আইইবি'র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নুরুজ্জামান, ডুয়েটের উপচার্য ও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি ড. এম হাবিবুর রহমান, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও আইইবি'র সদ্য বিদায়ী সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নুরুল হুদা,আইইবি'র ঢাকা সেন্টারের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন,
বাঙ্গালী জাতি শত বছর ধরে স্বাধীনতার স্বাদ পায় নি। বাংলা নামের দেশ বিশ্ব মানচিত্রে যুক্ত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। অথচ মাত্র তিন বছর সাত মাস ক্ষমতায় ছিলেন। তাঁকে বাঁচতে দেওয়া হয় নি। যুগে যুগে মীর জাফরের জায়গায় মোস্তাক, ইয়ার লতিফের জায়গায় জিয়াউর রহমান ছিল। যে বুলেট শেখ হাসিনা-শেখ রেহানাকে এতিম করেছে, সেই বুলেট খালেদা জিয়াকে বিধবা করেছে।
বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি নির্বাসিত হয়েছে। ৭ ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গায়েব করে দেওয়া হয়েছে।
২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার মূল লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তি ছিল, হাওয়া ভবন থেকে আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজকে বিএনপি যে আন্দোলন করছে সেই আন্দোলন সফল হবে না। কারণ যে আন্দোলনে জনগণ নেই, সেই আন্দোলন সফল হবে না।
দেশের উন্নয়নে ইঞ্জিনিয়াররা কাজ নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নের যে জোয়ার বয়ে গেছে তার সাথে প্রকৌশলীরা ওতপ্রোতভাবে রয়েছে। আজকে ছয় লেন আট লেন যে সেতু উদ্বোধন হচ্ছে তার পেছনের কারিগর ইঞ্জিনিয়ারদের অবদান অনস্বীকার্য। ইঞ্জিনিয়ারদের নানা সমস্যা ও দাবি দাওয়া সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। অনেক অসমাপ্ত কাজ আমাদের সমাপ্ত করতে হবে। এ জন্য তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আইইবি ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নুরুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন," বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ধরে এনে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানাই। ইঞ্জিনিয়াররা দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের সুবিধা অসুবিধা গুলো সরকারকে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি"
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি ও ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হাবিবুর রহমান বলেন, "পদ্মা সেতু থেকে মেট্রোরেল সরকারের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন। পদ্মা সেতু আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের যোগ্যতার প্রমাণ। সরকারের মেগা প্রকল্পে আমাদেকে সম্পৃক্ত করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে আমরা শেখ হাসিনাকে পেয়ে গর্বিত। নেহেরু যেমন ভারতে অনেক উন্নতি করেছে সেভাবে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে প্রভূত উন্নয়ন করেছেন।"
আইইবি এর সদ্য বিদায়ি সভাপতি ও রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নুরুল হুদা বলেন, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে তার প্রথম সারির সৈনিক ইঞ্জিনিয়াররা। করোনাকালীন যে সাত পেশার লোক মাঠে ছিল তার অন্যতম হচ্ছে প্রকৌশলীরা। উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিচ্ছে প্রকৌশলীরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে ইঞ্জিনিয়াররা নিরলস কাজ করে যাবেন। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঁচজন বিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারের নেতৃত্বে একটা সেল গঠন করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার দাবি জানান।
আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সংসদ সদস্য মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন" বঙ্গবন্ধু তার ক্ষমতার মাত্র তিন বছরে অনেক কাজ করেছিলেন কিন্তু সেই উন্নয়ন প্রচার ভালোভাবে আসেনি। অথচ তাকে এই জাতি হত্যা করেছে। তার হত্যার কোন মামলা নেওয়া হয় নি। এটা জাতির হিসেবে আমাদের কলঙ্কের।
সভাপতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছেন তার জন্য শান্তির বিকল্প নেই। আজকে আমরা পদ্মা সেতু, রুপপুর প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, বিদ্যুতের ৩২০০ কিলোওয়াট থেকে ২৬০০০ কিলোওয়াটে উন্নীতকরণ, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ সব সেক্টরের উন্নয়ন আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের কারণেই সম্ভব হয়েছে। শাহ জালাল বিমান বন্দরের উন্নয়ন ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, আইসিটি খাতে বিশাল সম্ভাবনা, প্রতিবছর আইসিটি খাত থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়, গৃহায়ন প্রকল্প, বিশ্বে শীর্ষ ১০ সবুজ কারখানার ৮ টি বাংলাদেশে এগুলো এই দেশের ইঞ্জিনিয়ারদের দক্ষতার প্রমাণ মেলে।উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে আগামীতেও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহবান জনান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), ইঞ্জিনিয়ার কাজী খায়রুল বাশার,আইইবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার রনক আহসান, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম হাজারী, ইঞ্জিনিয়ার অমিত কুমার চক্রবর্তী,আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসেন, আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. নজরুল ইসলামসহ আইইবির বিভিন্ন কেন্দ্র, উপকেন্দ্র ও বিভাগের নেতৃবৃন্দ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গুলোর বিপুল সংখ্যক এলামনাই এবং বিভিন্ন সেক্টরের বিপুল সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ার।