•   Sunday, 24 Nov, 2024
বিডি টাস্ক তথ্যপ্রযুক্তি জাইটেক্স গ্লোবাল এক্সপো 

প্রযুক্তিখাতে নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে দুবাই জাইটেক্স গ্লোবাল এক্সপো 

Generic placeholder image
  প্রকৌশল সমাচার ডেস্ক

গত ১৬ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসেছিল প্রযুক্তিখাতের উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও আইটি প্রফেশনালদের মিলনমেলা। জাইটেক্স গ্লোবাল এক্সপো ২০২৩’এর আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছিলো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘বিডি টাস্ক’। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশীয় প্রকৌশলীদের অবস্থান, ব্যবসা সম্প্রসারণে সম্ভাবনাসহ মেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রকৌশল সমাচারের সঙ্গে কথা বলেছেন বিডি টাস্কের পরিচালক তালজীল আহমেদ
প্র.স: এবারের জাইটেক্স সম্মেলনের অভিজ্ঞতা কেমন?
তানজীল: জাইটেক্সে আমাদের এবারের অভিজ্ঞতাটা একটু ভিন্ন ছিল। গতবছর আমরা যখন প্রথম সেখানে অংশ নেই তখন আমাদের স্টার্টআপ জোনে স্টল ছিল।  যদিও গত বছর সেখানেও আমরা ভালো সারা পেয়েছিলাম তবে এবছর বাংলাদেশ সরকার এবং বেসিস এর সহযোগিতায় বিজনেস অরিয়েন্টেড যেসকল হল  সেগুলোতে আমরা স্টল নিতে পেরেছি। অর্থাৎ কান্ট্রিওয়াইজ প্যাভিলিয়ন বলা যেতে পারে। অর্থাৎ এই প্যাভিলিয়ন গুলোতে বিজনেস গ্যাদারিং বেশি হয়। কান্ট্রি ব্রান্ডিং সাথে বি-টু-বি মিটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলাম। 
প্র.স: বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি মেলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন অনুভূতিটা কেমন ছিল?
তানজীল: জাইটেক্স হলো তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী, প্রযুক্তিবিদদের উদ্ভাবন নিয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচে বড় আকারের আয়োজন। জাইটেক্সের এবারের আসর হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুটি ভেনুতে। দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এবং দুবাই হারবার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার সিকিউরিটি, মোবিলিটি, সাসটেইনেবল টেকনোলজি এবং আরও বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিভিত্তিক সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছিলো বিশ্বের ১৭০ টির অধিক দেশের ৬ সহস্রাধিক প্রযুক্তি কোম্পানির প্রকৌশলী ও উদ্যোক্তারা। আমাদেরও সুযোগ হয়েছিল সেখানে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করার। সেটা নিসন্দেহে অনেক ভালো লেগেছে। 
প্র.স: বাংলাদেশীদের অংশ গ্রহণ কেমন ছিল? গেলো বছরতো আপনারাসহ সম্ভবত আর একটা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল।
তানজীল:হ্যা, মেলায় এবার বাংলাদেশের অংশ গ্রহণ বেড়েছে। যেমন গত বছর আমরা (বিডি টাস্ক) একাই অংশ নিয়েছিলাম। এবছরের আমরা ছাড়াও আরো ৪টি বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান সেখানে অংশ নেয়। সেখানে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ সরকার ও বেসিস।
প্র.স: এবারের এক্সপোতে কোন দিকটা নতুন আকর্ষণীয় মনে হয়েছে?
তানজীল: মেলায় বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তিবিদদের সাথে যোগাযোগ, তাদের প্রযুক্তিপণ্য ও চাহিদা জানা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন সেশন, সেমিনার, কর্মশালা এবং বিটুবি মিটিংয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয় জাইটেক্স কতৃর্পক্ষ। যা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য অনেক কাজে আসে। যারা এতে অংশ নেয় প্রত্যেকেরই আলাদা ইউনিকনেস থাকে এবং ডিফারেন্ট টাইপ অফ প্রোডাক্ট থাকে। তারা নতুন নতুন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে আসে। যেমন এবার রোবটিক্সের অনেকগুলো বিষয় ছিল এ ছাড়া এ-আই এর অনেক প্রোডাক্ট ছিল। এ-আই বেইজড বিজনেস কিভাবে করা যায় অর্থাৎ বিজনেস সফটওয়্যার এর মধ্যে কিভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা যায়, রোবটিক্স ব্যবহার করা যায় এই বিষয়গুলো এখানে ভালোভাবে এসেছে। আবার আরেকটা নতুন এবং দারুন বিষয় ছিল। দুবাই তাদের নতুন স্মার্ট সিটি কীভাবে ডিজাইন করেছে কি কি ফেসিলিটিজ সেখানে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে তারা প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। যা খুবই কার্যকর এবং দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। বিশেষ করে আমাদের দেশে যারা স্মার্ট সিটি বা স্মার্ট গর্ভনেন্স নিয়ে কাজ করতে চান, টেকনোলজি ইউজ করে স্মার্ট সিটির কনসার্ন নিতে গেলে এটা দারুন কাজে দিবে। 
প্র.স: এবারের মেলা থেকে আপনাদের প্রাপ্তি বা অর্জন কি?
তানজীল: আমাদের প্রাপ্তি অনেকগুলো বিষয় নিয়ে এটাকে প্রাপ্তি বলা যেতে পারে। প্রথমত এমন বড় একটি ইভেন্টে জয়েন করা এবং সেখান থেকে অনেক বাস্তব জ্ঞান নেওয়া, বিশাল নেটওয়ার্কের মানুষের সাথে যোগাযোগ এবং সম্পর্ক তৈরি হয়। তাদের সাথে নেটওয়ার্ক হয়, কমিউনিকেশন হয়। এবং সবাই নতুন নতুন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে আসে। এগুলো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে অনেক ইন্সপায়ার করেছে। সেখানে এরকম অনেক নতুন নতুন বিজনেস আইডিয়া পেয়েছি যা আমি হয়তো আগে কখনো চিন্তাও করতে পারতাম না। অনেকগুলো নতুন বিষয় শেখার সুযোগ হয়েছে যা হয়তো আগে আমি বাংলাদেশে বসে চিন্তাও করতাম না।  ফেয়ার থেকে আমাদের বিজনেসের অনেক প্রসার ঘটছে এটা একটা বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছি। কোম্পানি হিসেবে আমরা তো আমাদের প্রোডাক্টগুলো সেখানে ডিসপ্লে ও প্রমোট করেছি। আমাদের টার্গেট ছিল অন্তত মিডিল ইস্টে সবগুলো দেশে আমাদের রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকবে। সবগুলো দেশে আমাদের রি- এজেন্ট ও রিসেলার তৈরি হবে। আমরা অলরেডি ওমান সৌদি আরর, কাতার, লিবিয়াতে রিসেলার সেটআপ করে ফেলেছি যারা আমাদের দেশের সফটওয়্যার বিদেশে সেল করছে।


প্র.স: কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং হিসেবে অন্যান্য দেশের কাছে বাংলাদেশের প্রকৌশলী, প্রযুক্তি বা সফটওয়্যার এর চাহিদা কেমন?
তানজীল: আপনি জানেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমশক্তির ব্যপক চাহিদা রয়েছে। যদিও এখন সেখানকার মেডিক্যাল, হোটেল, রেস্টুরেন্ট সেক্টরে প্রচুর লোক কাজ করে। যারা দেশে রেমিট্যান্স আনতে ভুমিকা রাখছে। কিন্তু তারা ননটেকনিক্যাল হওয়ার কারনে কিন্তু অনেক কম টাকা পায়। মধ্যপ্রাচ্য কিন্তু প্রমিজিং এন্ড রাইজিং মার্কেট। তাদের অনেক টাকা রয়েছে। তবে ফাস্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিগুলোর মতো টেকনিক্যাল পিপল নেই। আইটিতে তাদের অনেক কিছু বাকি রয়েছে। সবকিছু টেকনোলজি বেইজড করে ফেলছে। সেখানে আমাদের অনেক বড় সুযোগ রয়েছে। স্পেশালি আমাদের টেকপিপলদের জন্য বড় সুযোগ। শ্রমিকদের পরিবর্তে আমরা যদি টেকনিক্যাল ম্যানপাওয়ার দিতে পারি তাহলে অনেক সুযোগ আছে। আমাদের আইটি কোম্পানিগুলোকেও এগিয়ে আসা দরকার। তাদের মার্কেটের দিকে নজর দিতে হবে। 
প্র.স: গতবছরের তুলনায় এবার বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণ কি বেড়েছে?
তানজীল: গত বছরের তুলনায় এবার পার্টিসিপেশন অনেক বেড়েছে। এবার ১২/১৩ টা কোম্পানি অংশ নিয়েছে। 
প্র.স: কেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের এই সম্মেলনে অংশ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন?
তানজীল: জাইটেক্সে যেহেতু বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারি ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের মিলন মেলা হয়। সেখানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্তমান গ্লোবাল বিজনেস ট্রেন্ড সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। তাই আমার মতে বাংলাদেশী প্রযুক্তিখাতের উদ্যোক্তা ও প্রফেশনালদের আরো বেশি পরিমানে সেখানে অংশ নেওয়া দরকার। স্টল নিতে গেলে হয়ত খরচের ব্যাপার আছে। তাই কেউ ব্যক্তিগতভাবেও অংশ নিতে পারে। সেখানে অভিজ্ঞতা নিতে পারে। নতুন উদ্যোক্তাদের অনেক কাজে দিবে। 
 

Comment As:

Comment (0)